24 Nov 2024, 05:59 pm

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি ; সুলিভানের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র সফরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও যুক্তরাজ্য সফরের নানা দিক তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুলিভান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি। আমার মনে পড়ে না, এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। কেউ জিজ্ঞেসও করেনি। ২০০৭ এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে যে অভিজ্ঞতা, এরপর এটা কেউ চায়?

বিএনপির আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আন্দোলন করে যাচ্ছে, আমরা তো কোনো বাধা দিচ্ছি না। তারা তো আন্দোলন করে যাচ্ছে, লোক সমাগম করে যাচ্ছে, খুব ভালো কথা। এতকাল চুরিচামারি করে যত পয়সা বানিয়েছিল এবং যত টাকা মানিলন্ডারিং হয়েছিল, সেগুলো এখন ব্যবহার হচ্ছে। অন্তত সাধারণ মানুষের কাছে কিছু টাকা তো যাবে। তারা যত আন্দোলন করবে, সাধারণ মানুষের পকেটে কিছু টাকা যাবে। মানুষ কিছুটা টাকা পাক এই দুঃসময়ে, সেটা তো ভালো।

শেখ হাসিনা বলেন, এই টাকাগুলো বের হওয়া দরকার তো। সেই টাকাও বের হচ্ছে, মানুষও কিছু টাকা পাচ্ছে। আমি বলেছি, কিছু বলার দরকার নাই তারা আন্দোলন করতে থাকুক। তবে হ্যাঁ, মানুষের যদি কোনো ক্ষতি করতে চেষ্টা করে অগ্নিসন্ত্রাস ওই ধরনের কিছু করে তখন তো ছাড়ব না। কারণ আমাদের সঙ্গে তো জনগণ আছে, আমাদের কিছু করা লাগবে না। জনগণকে ডাক দিলে তারাই ঠান্ডা করে দেবে। যখন অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল তখন সাধারণ মানুষই কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিল, এবারও তা হবে। তাদের সেট লোক আছে আসে, চলে যায়, খায়-দায়। মানুষ যদি কিছু টাকা পয়সা পায় তাতে ক্ষতি কি। আমি সাংবাদিকদের বলব, তাদের এই টাকার উৎস কি সেটা খবর নেওয়ার দরকার, তারা এত টাকা কোথায় থেকে পায় এবং এত টাকা কীভাবে খরচ করে, সেটার একটু খোঁজ নেওয়া দরকার।

তিনি বলেন, সামনে পূজা, আমরা সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করি এবং করব। আমরা অনুরোধ করেছি পূজামণ্ডপগুলো যেখানে সেখানে না করে, কলকাতায় এত বেশি জনসংখ্যা কয়টা পূজামণ্ডপ হয় সেই হিসেবে তো বাংলাদেশে অনেক বেশি হয়। তারপরও আমাদের স্থানীয় জনগণ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাই সচেতন আছে এটার নিরাপত্তার দেওয়ার জন্য। বিএনপির আমলের অত্যাচার থেকে হিন্দু,বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কেউ বাদ যায়নি। আবার সেটা যেন না করতে পারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সবাইকে সচেতন থাকতে পারে।

সরকারপ্রধান বলেন, তারা যদি দুর্গাপূজার দিকে কোনো দৃষ্টিই না দেয় তারপরও যদি আন্দোলন করতে থাকে, তারা তো তারিখ দিয়েই যাচ্ছে অমুক তারিখ ফেলে দিবে, তমুক তারিখ ফেলে দিবে। দিতে থাক অসুবিধা নাই, আমি এটাতে মাইন্ড করছি না। আমি মনে করি ভালো। আন্দোলনটা থাকলে মানুষ বেশ গরম থাকে, আমার পার্টিও ভালো থাকে, তখন আবার তারা নেমে পড়ে। মাঝে একটু ডিল দিয়েছিল কেউ নাই বলে, এখন এমপি সাহেবরাও দৌড়াচ্ছে এলাকায়, এখন সবাই দৌড়াদৌড়ি, ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছে। যার যার পজিশন ভাটায় টান দিয়েছিল, এখন দেখি তারা ভালোর দিকে যাচ্ছে। তবে পূজার সময় যেন কোনো অপকর্ম না করতে পারে, সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওয়াশিংটন সফরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভানের সঙ্গে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথা হয়। আমি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সরকারের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছি।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়। আমি সবুজ জলবায়ু তহবিলে অর্থায়ন এবং “লস এন্ড ড্যামেজ” ফান্ডকে কার্যকর করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, জেইক সুলিভান নারী শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সন্ত্রাস দমনের মতো বিষয়গুলোতে সরকারের অর্জনের প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য তিনি আবারও বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী জানান, সভায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে জোরদার করার বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেছে দুই দেশ।

তিনি বলেন, আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থানকে যেমন আরও সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করবে বলে আমি আশাবাদী। সামগ্রিক বিবেচনায় এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সফল বলে আমি মনে করি।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে অধিবেশন শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যে পৌঁছান তিনি।

দুই দেশে মোট ১৬ দিনের সফর শেষে বুধবার (৪ অক্টোবর) দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 13863
  • Total Visits: 1293858
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২১শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, বিকাল ৫:৫৯

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018